গত বন্যার ক্ষতে এখনো জর্জরিত সিলেটে বাসী। সেই ধাক্কা পাড়ি না দিতে আবারও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে সিলেটে আবারও বন্যা হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণে প্লাবিত হচ্ছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল।
সুরমার নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কারণে নগরের নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়েছে।
উক্ত জেলার ৭টি উপজেলা নিম্নাঞ্চল হাওয়াই বাড়ি-ঘর, মসজিদ, মন্দির, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।
বন্ধ হয়ে পড়েছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এরই মধ্যে সুরমা-কুশিয়ারা, সারি, লোভাছড়া ও ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সুরমা কুশিয়ারার ৪টি পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ১১ জুন থেকে সিলেটে দিনে-রাতে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। আর সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামের বৃষ্টিপাত বেশি হওয়াতে পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফের বন্যায় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা এবং নগর এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি উঠেছে। কিন্তু এখনো বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ফলে বড় বন্যার পুনরাবৃত্তি হতে পারে, আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদেরও।
এর আগে গত ১৫ থেকে সিলেটজুড়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন জেলার প্রায় চার লাখ মানুষ।
সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করায় অনেক স্থানে নদীর ডাইক ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এরই মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সড়ক পানিতে তলিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর, পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, আসামপাড়া, রুস্তুমপুর, তোয়াকুল ও লেংগুড়া ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ রনিখাই এবং পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের ৭৫ শতাংশ এলাকায় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া কানাইঘাটে সুরমার পানি পৌরশহরেও পানি ঢুকেছে। যত সময় যাচ্ছে, ততই পানি বাড়ছে। এছাড়া উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম লক্ষ্মীপ্রসাদ, সাতবাঁক, চতুল ও সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানিতে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর, জালালাবাদ ও টুকেরবাজার ইউনিয়নসহ নদীর তীর ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সিলেট নগরীর উপকণ্ঠ, শেখঘাট, বেতবাজার, সুবহানিঘাটের জাতরপুর ও কুশিঘাট এলাকার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত সিলেটে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বন্যা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
আবহাওয়া সিলেট অফিস সূত্র আরো জানায়, আগামী ১০ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিলেটে ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ থেকে ১৯ জুন ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সূত্র: বি ডি নিউজ ২৪
Post a Comment